Posts

বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন

১." বাড়ির কাছে আরশিনগর" কবিতায় ' আরশিনগর ' কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ২." বাড়ির কাছে আরশিনগর / ও এক পড়শি বসত করে "- আরশিনগরে থাকা পড়শির পরিচয় দাও। কবির সঙ্গে এই পড়শির সম্পর্ক আলোচনা করো। ৩."বাড়ির কাছে আরশিনগর " কবিতায়  বাউল তত্ত্ব কিভাবে  প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো। ৪." বাড়ির কাছে আরশিনগর" কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

কবিতার সারসংক্ষেপ

' আরশি ' শব্দের অর্থ আয়না। কিন্তু লালন তাঁর গানে ' আরশিনগর ' বলতে মনকে বুঝিয়েছেন। কারণ, মনের মধ্যেই চারপাশের জগৎ প্রতিফলিত হয়। সেখানে কবি এক পড়শির অস্তিত্বকে খুঁজে পেয়েছেন ।এই পড়শিই হলো বাউল সাধনার ঈশ্বর, যাঁকে তাঁরা ' মনের মানুষ ' বলে মনে করেন। কিন্তু বাউল সাধনায় এই পড়শির সন্ধান পাওয়া বা তাঁকে লাভ করা খুব সহজ নয়। তিনি যেখানে আছেন,তার চারপাশে আছে অতি গভীর জলরাশি। কবি মানুষের জাগতিক আশা - আকাঙ্খা ও বিষয় বাসনা ইত্যাদিকে এই জলরাশির প্রতীক দ্বারা বোঝাতে চেয়েছেন।সেই পড়শির কাছে যাওয়ার উপযুক্ত কোনো তরণি বা উপায়ও আবার নেই। তার থেকেও বড়ো কথা, এই পড়শি বা আত্ম তত্ত্ব - এর কোনো স্পষ্ট চেহারা হয় না, কারণ পড়শির হাত - পা - কাঁধ - মাথা কিছুই নেই। অর্থাৎ ,বাউলদের ঈশ্বর যে নিরাকার এ কথার মধ্যে দিয়ে লালন তাই বোঝাতে চেয়েছেন। অতএব সেই ' পড়শি ' শুধুই উপলব্ধির জগতে অবস্থান করেন। তাঁকে কখনও বোঝা যায়,কখনও বোঝা যায় না। অথচ তাঁর সন্ধান পেলেই মানুষের সব জীবন যন্ত্রণার অবসান ঘটত। কিন্তু তার সঙ্গে যে দূরত্ব টা ঘোচার নয়, কবির কথায় সে হল লক্ষ যোজন দূরত্ব। মানু...

কবি পরিচিতি

লালন ফকির জন্মগ্রহণ করেন ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে নদিয়া জেলার অধীনে কুষ্টিয়ার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত গড়াই নদীর তীরবর্তী ভাঁড়ারা গ্রামে।লোকায়ত বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বাউল গুরু হিসেবে তিনি পরিচিত হন।তিনি মনে করতেন ' মনের মানুষ- ই তাঁর ঈশ্বর।' তাঁকে পাওয়ার জন্য মন্ত্রতন্ত্র বা তীর্থদশনের কোনো প্রয়োজন নেই।তিনি জাতপাতের উর্ধ্বে উঠে প্রকৃত মানবাত্মার খোঁজ করেছিলেন। লালন ফকির ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন আধ্যাত্মিক সাধক। তিনি একাধারে সমাজ সংস্কারক,দার্শনিক ও মানবতাবাদী। তিনি বাংলাদেশে বাউল গানের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা।তাঁর গানে, গ্রামবাংলার সহজসরল মেঠো সুরে,মানবতার জয়গান শোনা যায়। কাঙাল হরিনাথ তাঁর সম্পাদিত পত্রিকায় বাঙালি সমাজের সঙ্গে লালনের গানের পরিচিতি ঘটান।১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত লালন - গীতিকা নামক লালনের গান সংকলন থেকে "বাড়ির কাছে আরশিনগর" গানটি নেওয়া হয়েছে। তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য গান হল"সব লোকে কয় লালন কি জাত"। ১৮৯০ সালের ১৭ ই অক্টোবর ছেউড়িয়ার আখড়া তে ১১৬ বছর বয়সে লালন ফকিরের জীবনাবসান ঘটে।